নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় এক দম্পতি এক নারীর কাছ থেকে সুদে পাঁচ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন দুই বছরে ওই টাকার বিপরীতে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন তাঁরা। এর পরও বাকি ৬০ হাজার টাকা দাবি করায় শিশুসন্তানকে বিক্রি করে দেন ওই দম্পতি। কিন্তু তাতেও রেহাই পাচ্ছিলেন না।
আবারও এসে হাজির হন সুদখোর সেই নারী। আরো টাকা দাবি করেন তিনি। তখন নিরুপায় হয়ে থানায় অভিযোগ করেন ওই দম্পতি।
তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত শনিবার রাতে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে ফতুল্লা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় সুদখোর লাকী বেগমকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে লাকীর কাছ থেকে শিশুটিকে কিনে নেওয়া রানু বেগম (৪২) নামের এক নারীকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) নাজমুল হাসান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, শিশুটির মা রানী বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তাঁরা শিশুটিকে উদ্ধার করেছেন।
পুলিশ জানায়, শিশুটির মা রানী বেগম পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার হান্নান চৌকিদারের স্ত্রী। তাঁরা সপরিবারে ফতুল্লা থানার আলীগঞ্জে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) কলোনিতে বসবাস করে আসছেন। সুদে টাকা ধার দেওয়া লাকী বেগমও ওই এলাকার বাসিন্দা। তবে আটক রানু বেগম মুন্সীগঞ্জে শ্রীনগর উপজেলার দক্ষিণ পাশের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর মিয়ার স্ত্রী।
শিশুটির মা রানী বেগম জানান, দুই বছর আগে লাকী বেগমের কাছ থেকে তিনি পাঁচ হাজার টাকা ঋণ নেন। দুই বছরে ওই টাকার বিপরীতে লাকী বেগমকে দুই লাখ ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন; এমনকি এক বছর আগে সুদের টাকা পরিশোধের জন্য তখন ছয় মাসের শিশুসন্তানকে বিক্রি করে দিয়ে পুরো টাকা দেন লাকীকে। গত ১৪ এপ্রিল লাকী আবার বাড়িতে এসে সুদসহ এক লাখ তিন হাজার টাকা দাবি করেন তাঁর কাছে। টাকা না দিলে তাঁকে মারধরের হুমকি দেন। এ ঘটনার পর তিনি ফতুল্লা থানায় অভিযোগ দেন।
আটক রানু বেগম জানান, তাঁর একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। কিন্তু ছেলেটি প্রতিবন্ধী। তাই তিনি একটি ছেলে দত্তক বা কেনার জন্য পরিচিতজনদের বলে রেখেছিলেন। এক বছর এক মাস আগে সুমা নামের তাঁর এক ভাগ্নি তাঁকে ফোন করে জানান যে একটি বাচ্চা বিক্রি হবে। ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বাচ্চাটি কেনেন রানু।